স্বর্ণের বাজার বৈশ্বিক এবং সর্বদা চাহিদা ও সরবরাহের উপর নির্ভর করে। স্বর্ণের দাম মার্কিন ডলারের দামের সাথে সম্পর্কিত। বাজারে ওঠানামা থাকলেও, দীর্ঘমেয়াদে স্বর্ণের মূল্য স্থিতিশীল থাকে।
সোনা সবসময়ই বিলাসিতা ও আর্থিক স্থিতিশীলতার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা, ডলার রেট, এবং স্থানীয় বাজারের চাহিদা-যোগান ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে সোনার দাম প্রতিনিয়ত ওঠানামা করে। বাংলাদেশেও সোনার বাজারের প্রতি মানুষের আগ্রহ এবং গুরুত্ব প্রচুর। বিয়ে, উৎসব, এবং বিনিয়োগ—এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কারণে সোনার চাহিদা বরাবরই বেশি। তাই, সোনার সর্বশেষ দামের খবর জানাটা সাধারণ মানুষের কাছে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। চলুন, আজকের আর্টিকেলে বাংলাদেশে সোনার বর্তমান মূল্য এবং এর পরিবর্তনের কারণগুলো বিস্তারিতভাবে জানি।
ক্যারেট অনুসারে স্বর্নের দাম –
২২ ক্যারেট: প্রতি ভরি ১৩৮,২৮৮ টাকা
২১ ক্যারেট: প্রতি ভরি ১৩২,০০১ টাকা
১৮ ক্যারেট: প্রতি ভরি ১১৩,১৪০ টাকা।
এই দাম জানুয়ারী ২০২৫ সালের। প্রতিদিনের সোনার দাম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের নিচের আর্টিকেল দেখে আসুন।
গত বছরের তুলনায় স্বর্ণের দাম বৃদ্ধি:
২২ ক্যারেট: প্রায় ৩০% বৃদ্ধি ২১ ক্যারেট: প্রায় ২৮% বৃদ্ধি ১৮ ক্যারেট: প্রায় ২৫% বৃদ্ধি
স্বর্ণের বিনিয়োগের লাভ:
স্বর্ণ একটি জনপ্রিয় বিনিয়োগ কারণ এটি মূল্য সংরক্ষণ করে। মুদ্রাস্ফীতির সময় স্বর্ণের দাম সাধারণত বৃদ্ধি পায়।স্বর্ণের বিনিয়োগে ঝুঁকি কম। গত বছরের তুলনায় স্বর্ণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় যারা স্বর্ণ কিনেছেন তারা লাভবান হয়েছেন।
স্বর্ণে লাভের হার:
২২ ক্যারেট: ৩০% ২১ ক্যারেট: ২৮% ১৮ ক্যারেট: ২৫%
অন্যান্য বিনিয়োগের সাথে তুলনা:
শেয়ারবাজারের তুলনায় স্বর্ণে বিনিয়োগের লাভ– ২০২৩ সালে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (DSE) প্রধান সূচক DSEX প্রায় ১০% বৃদ্ধি পেয়েছে। কিছু শেয়ারের দাম অনেক বেশি বেড়েছে, আবার কিছু শেয়ারের দাম কমেছে।
স্থায়ী সম্পত্তির তুলনায় স্বর্ণে বিনিয়োগের লাভ– ২০২৩ সালে ঢাকার আবাসিক সম্পত্তির দাম প্রায় ৫% বৃদ্ধি পেয়েছে। স্থায়ী সম্পত্তির দাম দীর্ঘমেয়াদে বৃদ্ধি পেতে পারে, তবে বাজারে ওঠানামাও হতে পারে।
স্বর্ণের বিনিয়োগের ঝুঁকি:
- স্বর্ণের দাম অস্থির হতে পারে।
- দীর্ঘমেয়াদে স্বর্ণের দাম অন্যান্য বিনিয়োগের তুলনায় কম বৃদ্ধি পেতে পারে।
- স্বর্ণের বিনিয়োগে লুকিয়ে রাখার ঝুঁকি থাকে।
স্বর্ণ একটি ঐতিহ্যবাহী বিনিয়োগ এবং এটি মূল্য সংরক্ষণের একটি ভালো উপায় হতে পারে। তবে, স্বর্ণের বিনিয়োগের কিছু ঝুঁকিও রয়েছে। বিনিয়োগ করার আগে আপনার ঝুঁকি সহনশীলতা এবং বিনিয়োগের লক্ষ্য বিবেচনা করা উচিত।
স্বর্ণের দামের উপর প্রভাব ফেলে যেসব কারণ
স্বর্ণের দাম বিভিন্ন কারণে ওঠানামা করে। নিচে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ উল্লেখ করা হলো:
- আন্তর্জাতিক বাজার: বৈশ্বিক চাহিদা ও সরবরাহের ভিত্তিতে স্বর্ণের দাম নির্ধারিত হয়।
- স্থানীয় মুদ্রার মান: ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে গেলে স্বর্ণের দাম বাড়ে।
- উৎসব মৌসুম: বিয়ে বা অন্যান্য উৎসবের সময় স্বর্ণের চাহিদা বেড়ে যায়, ফলে দামও বাড়ে।
- কর ও শুল্ক: আমদানি কর বা শুল্ক বৃদ্ধির ফলে স্বর্ণের দাম বেড়ে যায়।
কেন স্বর্ণ কিনবেন?
স্বর্ণ কেবলমাত্র অলঙ্কার হিসেবেই নয়, এটি একটি নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যম হিসেবেও বিবেচিত হয়। অর্থনৈতিক অস্থিরতার সময় স্বর্ণের দাম সাধারণত স্থিতিশীল থাকে, যা বিনিয়োগকারীদের কাছে এটি জনপ্রিয় করে তুলেছে।
কোথা থেকে স্বর্ণ কিনবেন?
বিশ্বস্ত স্বর্ণের দোকান বা বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)-এর তালিকাভুক্ত দোকান থেকে স্বর্ণ কিনুন। এতে মান এবং সঠিক দামের নিশ্চয়তা পাবেন।
উপসংহার
২০২৫ সালে স্বর্ণের বর্তমান বাজার দর সম্পর্কে ধারণা থাকা সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত যারা স্বর্ণ কিনতে বা বিক্রি করতে চান। স্বর্ণের বাজারের সাথে আপডেট থাকতে নিয়মিত বিশ্বস্ত সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করুন।