দুবাই, বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য এবং ব্যবসায়িক কেন্দ্র। আকর্ষণীয় স্থাপত্য, বিলাসবহুল জীবনযাত্রা এবং সমুদ্রের নীল জলরাশির জন্য দুবাই ভ্রমণের স্বপ্ন দেখেন অনেকেই। তবে দুবাই ভ্রমণ করতে হলে সবার আগে প্রয়োজন একটি বৈধ ভিসা।
বাংলাদেশ থেকে দুবাই যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ভিসার প্রয়োজন হয়, যা নির্ভর করে ভ্রমণের উদ্দেশ্য এবং সময়সীমার ওপর। ২০২৫ সালে দুবাই ভিসার খরচ কেমন হতে পারে, কীভাবে আবেদন করতে হয় এবং ভিসা পেতে কোন শর্তগুলো পূরণ করতে হয় – এই সমস্ত বিষয়ে সঠিক তথ্য জানা অত্যন্ত জরুরি।
এই আর্টিকেলে আমরা দুবাই ভিসার প্রকারভেদ, খরচ, আবেদন পদ্ধতি এবং প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো, যা আপনাকে ভ্রমণ পরিকল্পনা করতে সহায়তা করবে।
দুবাই ভিসার প্রকারভেদ | Types of Dubai Visa

দুবাই ভ্রমণের উদ্দেশ্য অনুযায়ী ভিসার বিভিন্ন ধরন রয়েছে। প্রতিটি ভিসার জন্য আলাদা শর্ত ও খরচ প্রযোজ্য। নিচে দুবাই ভিসার প্রধান প্রকারভেদ এবং তাদের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলো:
দুবাই ট্যুরিস্ট ভিসা (Tourist Visa)
দুবাই ট্যুরিস্ট ভিসার খরচ ভিসার মেয়াদ, এন্ট্রি সংখ্যা এবং আবেদন পদ্ধতির উপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে। নিচে বিভিন্ন প্রকারের ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য আনুমানিক খরচ উল্লেখ করা হলো:
- ৩০ দিনের সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসা: এই ভিসার জন্য খরচ প্রায় ১৮,৫০০ টাকা।
- ৩০ দিনের মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা: এই ভিসার খরচ প্রায় ৬৫০ দিরহাম, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১৯,০০০ টাকা।
- ৯০ দিনের সিঙ্গেল এন্ট্রি ভিসা: এই ভিসার জন্য খরচ প্রায় ২৫০০ দিরহাম, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭৫,০০০ টাকা।
এছাড়া, ভিসা প্রসেসিং ফি, ট্রাভেল ইন্সুরেন্স এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ মিলিয়ে জনপ্রতি মোট খরচ প্রায় ১৬,০০০ থেকে ১৭,০০০ টাকা হতে পারে।
দ্রষ্টব্য: উপরোক্ত তথ্যগুলো বিভিন্ন উৎস থেকে সংগৃহীত এবং সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হতে পারে। সর্বশেষ এবং সঠিক তথ্যের জন্য নির্ভরযোগ্য ট্রাভেল এজেন্সি বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করা অনুরোধ করা হল।
দুবাই বিজনেস ভিসা (Business Visa)
দুবাইতে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সাধারণত ইনভেস্টর ভিসা বা বিজনেস ভিসা প্রয়োজন হয়। এই ভিসার মাধ্যমে আপনি দুবাইয়ে ব্যবসা স্থাপন ও পরিচালনা করতে পারেন।
দুবাই বিজনেস ভিসার খরচ:
দুবাই বিজনেস ভিসার খরচ নির্ভর করে বিভিন্ন ফ্যাক্টরের ওপর, যেমন ব্যবসার ধরন, লাইসেন্স ফি, এবং অন্যান্য প্রশাসনিক খরচ। সাধারণত, এই খরচগুলো নিম্নরূপ হতে পারে:
- লাইসেন্স ফি: ব্যবসার ধরন অনুযায়ী লাইসেন্স ফি ভিন্ন হয়। সাধারণত, এটি ১০,০০০ থেকে ৫০,০০০ দিরহাম পর্যন্ত হতে পারে।
- ভিসা ফি: প্রতি ভিসার জন্য প্রায় ৩,০০০ থেকে ৫,০০০ দিরহাম খরচ হতে পারে।
- অন্যান্য খরচ: প্রসেসিং ফি, মেডিকেল পরীক্ষা, এবং ইমিরেটস আইড কার্ডের জন্য অতিরিক্ত খরচ প্রযোজ্য।
বাংলাদেশি টাকায় আনুমানিক খরচ:
১ দিরহাম = ৩০ টাকা (প্রায়) হিসেবে হিসাব করলে,
- লাইসেন্স ফি: প্রায় ৩,০০,০০০ থেকে ১৫,০০,০০০ টাকা।
- ভিসা ফি: প্রায় ৯০,০০০ থেকে ১,৫০,০০০ টাকা।
- অন্যান্য খরচ: প্রায় ৩০,০০০ থেকে ৬০,০০০ টাকা।
মোট আনুমানিক খরচ: প্রায় ৪,২০,০০০ থেকে ১৭,১০,০০০ টাকা।
দ্রষ্টব্য: উপরোক্ত খরচগুলো আনুমানিক এবং সময়ের সাথে পরিবর্তিত হতে পারে। সঠিক ও সর্বশেষ তথ্যের জন্য দুবাইয়ের সরকারি ওয়েবসাইট বা অনুমোদিত এজেন্সির সাথে যোগাযোগ করা উচিত।
দুবাই রেসিডেন্স ভিসা (Residence Visa)
দুবাইয়ের রেসিডেন্স ভিসার খরচ ভিসার ধরন, মেয়াদ এবং আবেদন প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে। সাধারণত, রেসিডেন্স ভিসার জন্য খরচ ২,০০০ থেকে ৮,৫০০ দিরহাম পর্যন্ত হতে পারে। বাংলাদেশি টাকায় (১ দিরহাম ≈ ৩০ টাকা) এই খরচ প্রায় ৬০,০০০ থেকে ২,৫৫,০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে।
নিচে কিছু উদাহরণ দেওয়া হলো:
- ফ্যামিলি রেসিডেন্স ভিসা (২ বছর): প্রায় ২,০০০ দিরহাম , যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬০,০০০ টাকা।
- রেসিডেন্স পারমিট: ৮,৫০০ দিরহাম থেকে শুরু, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২,৫৫,০০০ টাকা।
এছাড়া, কিছু সূত্রে রেসিডেন্স ভিসার খরচ ২,০০০ থেকে ৬,০০০ দিরহাম উল্লেখ করা হয়েছে যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৬০,০০০ থেকে ১,৮০,০০০ টাকা।
খেয়াল রাখতে হবে, এই খরচের মধ্যে মেডিকেল পরীক্ষা, ইমিরেটস আইডি ফি এবং অন্যান্য প্রশাসনিক খরচ অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। তাই, সঠিক এবং সর্বশেষ তথ্যের জন্য দুবাইয়ের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ বা নির্ভরযোগ্য ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।
দুবাই ট্রানজিট ভিসা (Transit Visa)
দুবাই ট্রানজিট ভিসার খরচ ভিসার মেয়াদ এবং প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতির ওপর নির্ভর করে। সাধারণত, ৪৮ ঘণ্টার ট্রানজিট ভিসা বিনামূল্যে প্রদান করা হয়, তবে ৯৬ ঘণ্টার ট্রানজিট ভিসার জন্য প্রায় ৫০ দিরহাম (AED) ফি প্রযোজ্য।
বাংলাদেশি টাকায় এই ফি প্রায় ১,৫০০ টাকা (১ দিরহাম = ৩০ টাকা) হতে পারে। তবে, এটি সময়ের সাথে পরিবর্তিত হতে পারে এবং ভিসা প্রক্রিয়াকরণ ফি, ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্সসহ অন্যান্য খরচও প্রযোজ্য হতে পারে।
সর্বশেষ এবং নির্ভরযোগ্য তথ্যের জন্য সংশ্লিষ্ট ট্রাভেল এজেন্সি বা দুবাইয়ের দূতাবাসের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
দুবাই ওয়ার্ক পারমিট (Work Permit)
দুবাইয়ের ওয়ার্ক পারমিট ভিসার খরচ বাংলাদেশী টাকায় ভিন্ন ভিন্ন উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নিম্নরূপ:
- এজেন্সির মাধ্যমে: এজেন্সির উপর নির্ভর করে খরচ প্রায় ৩ লাখ টাকা থেকে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
- সরকারি পদ্ধতিতে: সরকারি পদ্ধতিতে ভিসা প্রক্রিয়া করলে খরচ প্রায় ২ লাখ টাকা থেকে ৪ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
- বেসরকারি পদ্ধতিতে: বেসরকারি এজেন্সি বা দালালের মাধ্যমে ভিসা প্রক্রিয়া করলে খরচ প্রায় ৩ লাখ টাকা থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
দ্রষ্টব্য: উপরের তথ্যগুলো বিভিন্ন উৎস থেকে সংগৃহীত হয়েছে এবং সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হতে পারে। সর্বশেষ ও নির্ভরযোগ্য তথ্যের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা ভিসা এজেন্সির সাথে পরামর্শ করা করার অনুরোধ রইলো।
দুবাই গোল্ডেন ভিসা (Golden Visa)
দুবাইয়ের গোল্ডেন ভিসা প্রাপ্তির জন্য নির্দিষ্ট বিনিয়োগের পরিমাণ এবং প্রক্রিয়া রয়েছে। গোল্ডেন ভিসা পেতে হলে আপনাকে কমপক্ষে ২০ লাখ দিরহাম (প্রায় ৬০ লাখ টাকা) মূল্যের সম্পত্তি কিনতে হবে।
গোল্ডেন ভিসা প্রক্রিয়া:
- বিনিয়োগ: ২০ লাখ দিরহাম মূল্যের সম্পত্তি ক্রয়।
- আবেদন ফি: ১,২৫০ দিরহাম (প্রায় ৪১,০০০ টাকা)।
- ভিসা মেয়াদ: ১০ বছর।
মোট খরচের হিসাব:
- বিনিয়োগ: ২০ লাখ দিরহাম (প্রায় ৬০ লাখ টাকা)।
- আবেদন ফি: ১,২৫০ দিরহাম (প্রায় ৪১,০০০ টাকা)।
মোটে, গোল্ডেন ভিসা পেতে আপনার প্রাথমিক বিনিয়োগ হবে প্রায় ৬০ লাখ ৪১,০০০ টাকা।
দুবাই ভিসা প্রক্রিয়া | Dubai Visa Process
দুবাই ভিসা পাওয়ার জন্য কিছু নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হয়। এই প্রক্রিয়াটি সাধারণত সোজা, তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধাপ রয়েছে যা আপনাকে নিশ্চিতভাবে সম্পন্ন করতে হবে। এখানে দুবাই ভিসা প্রক্রিয়া বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো:
ভিসার ধরন নির্বাচন
প্রথমে আপনাকে যাত্রার উদ্দেশ্য অনুযায়ী ভিসার ধরন নির্বাচন করতে হবে। দুইটি প্রধান ক্যাটাগরি রয়েছে:
- ট্যুরিস্ট ভিসা: সাধারণ ভ্রমণের জন্য।
- বিজনেস ভিসা: ব্যবসা সংক্রান্ত ভ্রমণের জন্য।
- ওয়ার্ক ভিসা: দুবাইতে কাজ করার জন্য।
- ট্রানজিট ভিসা: যদি আপনি দুবাইয়ে ট্রানজিটে থামেন।
প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস প্রস্তুতি
দুবাই ভিসা আবেদন করার জন্য কিছু ডকুমেন্টস প্রস্তুত করতে হবে। সাধারণত, এই ডকুমেন্টগুলো প্রয়োজন হয়:
- পাসপোর্ট: আবেদনকারী ব্যক্তির বৈধ পাসপোর্ট, যেটি ভিসা আবেদন জমা দেওয়ার দিন থেকে কমপক্ষে ৬ মাস বৈধ হতে হবে।
- পাসপোর্ট সাইজ ফটোগ্রাফ: সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- ফ্লাইট টিকিট: দুবাই যাওয়ার টিকিটের কপি।
- আবাসন নিশ্চিতকরণ: দুবাইয়ে থাকার স্থান নিশ্চিতকরণ (হোটেল বুকিং, আত্মীয়-স্বজনের বাসা ইত্যাদি)।
- ব্যাংক স্টেটমেন্ট: আর্থিক অবস্থার প্রমাণ হিসেবে ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা একাউন্ট ব্যালান্স।
- বিজনেস বা অন্যান্য প্রমাণপত্র: বিজনেস ভিসা বা কাজের জন্য আরও কিছু প্রমাণপত্র (যেমন কোম্পানি চিঠি বা চাকরির চুক্তি)।
ভিসা আবেদন পদ্ধতি
ভিসা আবেদন করার জন্য আপনি তিনটি প্রধান পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন:
- অনলাইন আবেদন:
- দুবাইয়ের অফিসিয়াল ইমিগ্রেশন সাইট বা নির্ভরযোগ্য ভিসা এজেন্সির ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করা যায়। এই প্রক্রিয়া দ্রুত এবং সুবিধাজনক।
- ভিসা এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন:
- আপনি যদি একটি ভিসা এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন করতে চান, তবে তারা আপনার সকল ডকুমেন্ট যাচাই করে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করবে।
- দুবাই কনস্যুলেট বা এমিরেটস এয়ারলাইন্স:
- যদি আপনি দুবাইয়ের কনস্যুলেট বা এমিরেটস এয়ারলাইন্সের মাধ্যমে আবেদন করেন, তবে তারা আপনাকে সাহায্য করবে ভিসা পেতে।
ভিসা ফি পরিশোধ
ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া শুরুর পর, আবেদনকারীকেও ভিসার জন্য নির্ধারিত ফি পরিশোধ করতে হবে। এই ফি ভিসার ধরন ও মেয়াদ অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। ফি সাধারণত অনলাইন পেমেন্ট বা ব্যাংক ট্রান্সফার মাধ্যমে পরিশোধ করা যায়।
ভিসা প্রসেসিং
ভিসা আবেদন জমা দেওয়ার পর, প্রক্রিয়া শুরু হয়।
- সাধারণত ৩-৭ কর্মদিবস সময় লাগতে পারে।
- যদি কোনো তথ্যের বা ডকুমেন্টের সমস্যা থাকে, তবে তা পুনরায় যাচাই করা হতে পারে।
ভিসা অনুমোদন
ভিসা প্রাপ্তির পর, আপনার পাসপোর্টে স্ট্যাম্প করা হবে অথবা অনলাইনে ই-ভিসা হিসেবে পাঠানো হবে। আপনি যদি ই-ভিসা পান, তবে সেটি মুদ্রণ করে যাত্রার সময় সাথে রাখতে হবে।
যাত্রা এবং দুবাই প্রবেশ
ভিসা অনুমোদিত হওয়ার পর, আপনি নির্ধারিত তারিখে দুবাই যেতে পারবেন। দুবাই বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর, ইমিগ্রেশন চেকপয়েন্টে আপনার ভিসা যাচাই করা হবে।
এইভাবে আপনি দুবাই ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারবেন।
দুবাই ভিসার পাওয়ার জন্য শর্ত ও নিয়ম
দুবাই ভিসা পাওয়ার জন্য কিছু নির্দিষ্ট শর্ত ও নিয়ম অনুসরণ করতে হয়। এই শর্তগুলো ভিসার ধরন, আবেদনকারীর দেশের নাগরিকত্ব এবং অন্যান্য বিষয় অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে। তবে কিছু সাধারণ শর্ত রয়েছে, যেগুলো সকল ভিসা প্রকারের জন্য প্রযোজ্য। এখানে দুবাই ভিসার জন্য প্রধান শর্ত ও নিয়মগুলো আলোচনা করা হলো:
পাসপোর্টের বৈধতা
- আবেদনকারীর পাসপোর্টে অবশ্যই কমপক্ষে ৬ মাস বৈধতার মেয়াদ থাকতে হবে।
- পাসপোর্টে দুটি খালি পৃষ্ঠা থাকতে হবে, যাতে ভিসা সিলম্প দেওয়া যেতে পারে।
বয়সের সীমা
- সাধারণভাবে, ১৮ বছর থেকে ৬০ বছর বয়সী ব্যক্তিরা দুবাই ভিসা আবেদন করতে পারেন।
- কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে, বয়সের সীমা ভিন্ন হতে পারে, যেমন: শিশু বা বৃদ্ধদের জন্য আলাদা শর্ত থাকতে পারে।
আর্থিক অবস্থা
- ভিসা আবেদনের সময় আবেদনকারীর ব্যাংক স্টেটমেন্ট অথবা আর্থিক সক্ষমতার প্রমাণ দাখিল করতে হয়।
- আবেদনকারীর পর্যাপ্ত অর্থ থাকতে হবে, যাতে তারা দুবাইয়ে থাকার খরচ এবং অন্যান্য জরুরি খরচ সামলাতে পারে।
ভিসার আবেদন ফি
- ভিসার জন্য নির্দিষ্ট ফি পরিশোধ করতে হবে, যা ভিসার প্রকারভেদ এবং মেয়াদ অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়।
- এই ফি এককালীন পরিশোধ করতে হবে এবং তা সাধারণত ফেরতযোগ্য নয়।
স্বাস্থ্য বীমা
- বর্তমানে অনেক ক্ষেত্রে, দুবাই ভিসার জন্য আবেদনকারীর স্বাস্থ্য বীমা থাকতে হতে পারে, বিশেষত দীর্ঘমেয়াদী ভিসার জন্য।
- বীমা প্রমাণপত্র সংযুক্ত করা বাধ্যতামূলক হতে পারে।
ভিসা প্রক্রিয়ায় সময়
- দুবাই ভিসা প্রক্রিয়া সাধারণত ৩-৭ কর্মদিবস সময় নেয়, তবে এটি কেসের উপর নির্ভর করে।
- কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ প্রক্রিয়ায় ভিসা নিতে একাধিক সপ্তাহ সময়ও লাগতে পারে।
অতিরিক্ত শর্ত
- ভিসা প্রত্যাখ্যান: দুবাই ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যাত হতে পারে যদি আবেদনকারীর কোনো তথ্য বা ডকুমেন্ট ভুল বা অসম্পূর্ণ থাকে, অথবা যদি তাদের অতীতে কোনো অপরাধমূলক কার্যকলাপের ইতিহাস থাকে।
- দুবাইয়ে ফেরত পাঠানো: যদি দুবাই পৌঁছানোর পর কোনো কারণেই ভিসার শর্ত না মানা হয়, তাহলে ব্যক্তি দুবাই থেকে ফেরত পাঠানো হতে পারে।
ট্রানজিট ভিসা
- যদি আপনি দুবাইয়ে ট্রানজিট হিসেবে থাকেন, তবে আপনাকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দেশে প্রবেশ করতে হবে এবং সেখানে খুব বেশি সময় থাকতে পারবেন না (সাধারণত ৪৮ ঘণ্টা বা ৭২ ঘণ্টা)।
মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা
- কিছু ক্ষেত্রে, বিশেষ ব্যবসায়িক ভিসার জন্য একাধিক প্রবেশ (multiple entry) ভিসা দেওয়া হয়, যা একাধিকবার দুবাই প্রবেশের সুযোগ দেয়।
ভিসা শর্ত লঙ্ঘন
- দুবাই ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দেশ থেকে না যাওয়ার ফলে জরিমানা হতে পারে এবং ভবিষ্যতে ভিসা আবেদন নিষিদ্ধ করা হতে পারে।
- অবৈধ কাজ (যেমন: বেআইনি কাজ করা) করলে বা অফিসিয়াল শর্ত ভঙ্গ করলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে।
দুবাই ভিসা প্রক্রিয়া এবং শর্তগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এবং এগুলোর সঠিকভাবে পালন করা না হলে ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যাত হতে পারে বা দেশে প্রবেশের অনুমতি না পেতে পারে। সুতরাং, ভিসা আবেদন করার আগে সব শর্ত ও নিয়ম বিস্তারিতভাবে পড়া উচিত এবং যথাযথ প্রমাণপত্র প্রস্তুত করা প্রয়োজন।
আরও পড়ুনঃ মালয়েশিয়া ভিসার দাম কত ২০২৫
উপসংহার
দুবাই ভিসার প্রক্রিয়া ও শর্তাবলী যথাযথভাবে মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২০২৫ সালের জন্য ভিসা ফি এবং প্রক্রিয়া কিছুটা পরিবর্তিত হলেও, আবেদনকারীর পাসপোর্টের বৈধতা, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস, আর্থিক শর্ত এবং বয়সের সীমা নিশ্চিত করা প্রাথমিক শর্ত। ভিসা প্রক্রিয়া সাধারণত সোজা, তবে প্রতিটি ধাপ সাবধানে অনুসরণ করা উচিত। ভিসার জন্য নির্ধারিত ফি, আবেদন সময়, স্বাস্থ্য বীমা এবং অন্যান্য শর্ত মেনে চললে আপনার আবেদন সফল হতে পারে।
যে কেউ দুবাই ভ্রমণ বা কাজের জন্য যাচ্ছেন, তাদের জন্য এই শর্তগুলো জানা এবং তা অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে কোনো ধরনের আইনগত জটিলতায় পড়তে না হয়। সঠিক তথ্য ও প্রস্তুতির মাধ্যমে আপনি সহজেই দুবাই ভিসা পেতে পারেন এবং আপনার ভ্রমণ বা ব্যবসায়িক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারেন।
তবে, যেহেতু ভিসা সম্পর্কিত নিয়মাবলী মাঝে মাঝে পরিবর্তিত হতে পারে, তাই ভিসা আবেদন করার পূর্বে সর্বশেষ তথ্য জানা গুরুত্বপূর্ণ।